শাবি প্রতিনিধি
উন্নয়ন কর্মকান্ডের বলি হিসেবে টিলার সম্মুখভাগ ও গাছ কাটার প্রতিবাদ জানিয়ে মানববন্ধন করেছে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। সোমবার ফাঁকা ক্যাম্পাসের ‘গাছ কাটা’র জায়গায় দাঁড়িয়ে প্রতিবাদ জানান শিক্ষার্থীরা। এসময় শিক্ষার্থীরা পরিবেশ ধ্বংস করে উন্নয়ন চাই না, প্রাকৃতিক সম্পদের যথাযথ রক্ষণাবেক্ষণ চাই প্রভৃতি স্লোগান সম্বলিত প্ল্যাকার্ড বহন করেন।
এছাড়া প্রশাসনের উদ্দেশ্যে নির্দিষ্ট তিনদফা দাবি পেশ করেন শিক্ষার্থীরা। মানববন্ধনে অংশগ্রহণ কারী শিক্ষার্থীদের গণমাধ্যমে প্রেরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তি থেকে এ তথ্য জানা গেছে।
প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে শিক্ষার্থীরা জানান, টিলার সম্মখভাগ ও বিশাল একটি গাছ কাটাতে প্রকৃতপক্ষে উন্নয়নের নামে চালানো প্রকৃতি ধ্বংসের চিত্রের প্রমাণ মেলে। প্রাণ ও প্রকৃতি বিরোধী এই কর্মকান্ডের প্রতিবাদ জানিয়ে এই প্রতিবাদী অবস্থান তাদের। সোমবার দুপুরে শাবির প্রধান ফটকে এবং পরবর্তীতে ই-বিল্ডিং এর পাশে কেটে ফেলার গাছের স্থানে প্রতিবাদী অবস্থান কর্মসূচী করেন শাবি শিক্ষার্থীরা।
এসময় তারা প্রশাসনের প্রকৃতি বিধ্বংসী এই কাজের প্রতিবাদ জানিয়ে তিনটি দাবী তুলে ধরেন। এর মধ্যে রয়েছে উন্নয়নের নামে প্রাণ-প্রকৃতি না ধ্বংস করা, ক্যাম্পাসের অভ্যন্তরীন গাছ ও টিলার রক্ষণাবেক্ষণের জন্য পর্যাপ্ত পদক্ষেপ দ্রুত গ্রহণ ও অবকাঠামো নির্মাণে প্রাকৃতিক ভারসাম্য যেন বজায় থাকে এমন স্থাপত্য ডিজাইন করতে হবে।
এদিকে টিলা ও গাছ কাটার প্রতিবাদ জানিয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশবাদী সংগঠন গ্রীন এক্সপ্লোর সোসাইটি। সংগঠনটির প্রচার ও প্রযুক্তি সম্পাদক আসিফ বিন আলম সিয়াম স্বাক্ষরিত গণমাধ্যমে প্রেরিত একটি প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, শাবি প্রশাসনের সাম্প্রতিক সময়ে পরিবেশবিরুদ্ধ এ ধরনের কাজে আমরা ব্যথিত ও উদ্বিগ্ন। যেখানে বিকল্প সুযোগ আছে সেখানে আমরা চাই বিশ্ববিদ্যালয়ের একটি গাছও যেন না কাটা পড়ে।
উল্লেখ্য, বিশ্ববিদ্যালয়টিতে ক্রমবর্ধমান উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় ছাত্রীদের একটি আবাসিক তল তৈরীতে টিলার সম্মুখভাগ ও সেন্টার অব এক্সিলেন্সে যাওয়ার রাস্তা তৈরীতে পুরোনো একটি রেইনট্রি গাছ কাটে সংশ্লিষ্টরা।
তবে কোনোটিতেই পরিবেশ অধিদপ্তরের ছাড়পত্র নেয়নি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। বিষয়টি নিয়ে তাৎক্ষণিক প্রতিবাদ জানায় বাংলাদেশ পরিবেশ আন্দোলন (বাপা) সহ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। তবে উভয় ইস্যুতেই দায়সারা বক্তব্য দিয়েছে শাবি প্রশাসন। অন্যদিকে গাছ কাটার বিষয়টি পুরোপুরি অস্বীকার করে নির্মাতা প্রতিষ্ঠান মেসার্স মোস্তফা কামাল ।
সার্বিক বিষয়ে শাবির কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. আনোয়ারুল ইসলাম যুগান্তরকে বলেন, এভাবে সবকিছুতে ভুল ধরলে ভবন তৈরী করা আমাদের জন্য কঠিন হয়ে যাবে। এ ধরনের বড় কাজ করতে হলে দু একটি ছোট ক্ষতি হবেই, যা আমাদেরকে মেনে নিতে হবে। তবে আমরা পরিবেশ রক্ষার্থে সর্বোচ্চ সতর্ক থাকবো।
এর আগে ছাত্রীদের আবাসিক ভবন তৈরীর জন্য টিলার সম্মুখভাগ কাটার বিষয়টিকেও ’মাটির ডিবি’ বলে এড়িয়ে যায় প্রশাসন। এদিকে দুটি প্রকল্পের আওতায় বিশ্ববিদ্যালয়টিতে আগামী ২ বছরে ২৩ টি ভবন নির্মার্ণের কথা রয়েছে।