থার্ডআই ডেস্ক

সম্প্রতি প্রকাশিত বেশ কিছু রিপোর্টে দাবি করা হয়েছিল যে, আগামী কয়েক মাসে চীনে করোনা মহামারীর তিনটি ঢেউ আছড়ে পড়বে। পাশাপাশি এও দাবি করা হয়েছে যে প্রায় ১০ লাখ মানুষ এতে প্রাণ হারাবেন। এই আবহে এবার নতুন রিপোর্ট প্রকাশ্যে এল। তাতে দাবি করা হচ্ছে, বর্তমানে চীনে দৈনিক ১০ লাখ মানুষ করোনা আক্রান্ত হচ্ছেন। এর মধ্যে থেকে প্রতিদিনি গড়ে ৫০০০ জন মারা যাচ্ছেন কোভিডে। যদিও চীনা সরকারি তথ্য এসব কিছুই স্বীকার করেনি। এই আবহে চীনের স্বচ্ছতার অভাব নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। সমালোচনা হচ্ছে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থাও চীনকে আহবান জানিয়েছে, যাতে তারা তথ্য গোপন না করে।

লন্ডন ভিত্তিক সংস্থা এয়ারফিনিটি দাবি করেছে, বর্তমানে চীনে দৈনিক ১০ লাখ লোক কোভিডে আক্রান্ত হচ্ছেন। আর ৫০০০ জন প্রাণ হারাচ্ছেন। এর আগে এয়ারফিনিটি দাবি করেছিল, চীনে তিনটি নয় বরং করোনা সংক্রমণের দুটি ঢেউ আছড়ে পড়বে আগামী কয়েক মাসে। এয়ারফিনিটির দাবি, জানুয়ারির মাঝামাঝি এবং মার্চের শুরুর দিকে এই দুটো পৃথক করোনার ঢেউয়ে জর্জরিত হবে চীন। এয়ারফিনিটির টিকাকরণ এবং মহামারী বিভাগের প্রধান ড. লুইজ ব্লেয়ার বলেন, ‘চীনে এখন এমনই পরিস্থিতি যে তারা গণহারে করোনা পরীক্ষা বন্ধ করে দিয়েছে। উপসর্গহীন সংক্রমণও গোনায় ধরা হচ্ছে না চীনে। এই আবহে চীনে করোনা সংক্রমণের ভয়াবহতা কোনও তথ্যের দ্বারা বিশ্লেষণ করা যাবে না এখনই।’

এর আগে গত মাসে এয়ারফিনিটি তাদের রিপোর্টে দাবি করেছিল, চীন নিজেদের ‘কোভিড জিরো’ নীতি থেকে সরে এলে সেদেশে ১৩ থেকে ২১ লাখ লোক কোভিডে আক্রান্ত হয়ে প্রাণ হারাতে পারে। রিপোর্টে দাবি করা হয়, চীনে তৈরি নিম্নমানের টিকার কারণে সেদেশের জনগণ কোভিড মোকাবিলায় সক্ষম হয়নি। এদিকে এয়ারফিনিটির বিশেষজ্ঞ ড. ব্লেয়ার দাবি করেছেন, বর্তমান পরিস্থিতিতে চিনে কোভিড সংক্রমণে মৃত্যু রেকর্ড করার পদ্ধতি বদলে গিয়েছে। শুধুমাত্র সেই সব রোগীকেই কোভিডে মৃত বলে গণ্য করা হচ্ছে, যাদের পরীক্ষার ফল পজিটিভ এসেছে এবং নিঃশ্বাসজনিত সমস্যার কারণেই তাদের মৃত্যু হয়েছে। অন্যান্য দেশে স্বভাবতই এভাবে কোভিড মৃত্যুর তথ্য সংগ্রহ করা হয় না। তার মানে সরকারি স্তরে কোভিড নিয়ে তথ্য গোপন করছে চীন।
রিপোর্ট অনুযায়ী, চীনের পরিস্থিতি এতটাই ভয়াবহ যে সেখানে কোভিড নমুনা পরীক্ষার ফলাফল আসার আগেই দ্রুত গতিতে ছড়িয়ে পড়ছে সংক্রমণ। ফলে টেস্টের রিপোর্টের আগে উপসর্গ দেখেই শুরু করতে হচ্ছে চিকিৎসা। চীনে কোভিড ছড়িয়ে পড়ার নেপথ্য কারণ হিসাবে উঠে আসছে ওমিক্রনের বিএফ ৭ সাবভ্যারিয়েন্ট। এই আবহে সেদেশে যেসব করোনা রোগী ভর্তি হচ্ছেন, তাদের মধ্যে প্রবীণ নাগরিকের সংখ্যা বেশি বলে জানা যাচ্ছে। অভিযোগ উঠেছে, চীনের বহু প্রবীণ নাগরিকই কোভিড টিকা থেকে বঞ্চিত থেকেছেন। এই আবহে কোভিডের বাড়বাড়ন্তে সবথেকে বেশি প্রভাবিত হচ্ছেন ষাটোর্ধ্বরা। এই পরিস্থিতিতে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা চীনকে স্পষ্ট বার্তা দিয়েছে, বর্তমান পরিস্থিতি সম্পর্কে তথ্য যাতে গোপন না করা হয়। এরই মধ্যে বিভিন্ন আন্তর্জাতিক মিডিয়াতে দাবি করা হচ্ছে, চীনের হাসপাতালগুলোতে মানুষের ঢল নেমেছে এবং শ্মশানে মৃতদেহর স্তূপ জমেছে।